চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:চুনারুঘাট মাদ্রাসা মার্কেট এলাকায় ‘বিসমিল্লাহ রেস্টুরেন্ট’ নামক একটি ভাড়া দোকানে অস্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি ও বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ব্যস্ততম রাস্তার একটি বড় অংশ দখল করে ব্যবসা পরিচালনা করার ফলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বিসমিল্লাহ রেস্টুরেন্টের সামনে দুটি শাটারের বিপরীতে রাস্তার অনেকটা অংশ জুড়ে তেলের বিভিন্ন খাবার বিক্রি করা হচ্ছে। সম্প্রতি এই দোকানে খাবার খেতে আসা দুজন ব্যক্তি জানান, তাদের কাছে আলুর চপগুলোতে টক জাতীয় গন্ধ লেগেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, দোকানের ওয়েটার সুফিক মিয়ার কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করেন যে, দুই দিন আগের ফ্রিজে রাখা আলু ভর্তা দিয়ে সেই আলুর চপ তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও, অনেক পুরনো তেল দিয়ে ভাজা হচ্ছে এখানকার বিভিন্ন খাবার। পর্যবেক্ষণে আরও দেখা যায়, এখানকার খাবারের প্লেটগুলোতে তেল চিটচিটে ভাব রয়েছে এবং বেশিরভাগ খাবার তৈরির উপাদানগুলো খোলা অবস্থায় রাখা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এর ফলে সাধারণ মানুষ অজান্তেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই দোকানে আলুর চপ, বেগুনের চপ, কোয়েল পাখি ভাজা, ঝাল মুড়ি, সবজির বড়া ও চিংড়ির বড়া বিক্রি হয়। তবে চিংড়ির বড়ার নামে চিংড়ি শুটকি ও শুকনো মরিচ ভেজে পরিবেশন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কালো তেলে ভেজে এসব খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ব্যস্ততম রাস্তা দখল করে খাবার বিক্রির ফলে পথচারীদের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে এবং যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, এই সড়কের পাশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকায় সবসময় মানুষের ভিড় লেগে থাকে। দোকানের এমন কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ক্রেতা জানান, এখানকার খাবার তাৎক্ষণিকভাবে সুস্বাদু মনে হলেও এর কারণে পরবর্তীতে পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যায় পড়তে হয় এবং ডাক্তারদের কাছে হাজার হাজার টাকা গুনতে হয়। স্থানীয়দের মনে প্রশ্ন জেগেছে, দোকানে বিক্রি হওয়া কোয়েল পাখিগুলো আসলে জীবিত নাকি মৃত এবং কতদিন ধরে সেগুলো ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিসমিল্লাহ রেস্টুরেন্টের মালিক মোঃ দিদার মিয়া জানান, আমি আলুর চপ নিজে খাইছি এটি পেঁয়াজ দেয়ার কারণে টক হয়, সাথে সাথেই ওয়েটার শফিক মিয়াকে ধমক দিয়ে বলেন তুমি যদি নিজে নিজে মানুষকে ধরা দাও তাহলে আমি ব্যবসা করবো কিভাবে। এই বিষয়ে জানতে চুনারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, টিক আছে দেখতেছি বিষয়টি কি করা যায় এদেরকে তো বলছিলাম রাস্তার মধ্যে ব্যবসা না করার জন্য,স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা এবং জনদুর্ভোগ কমাতে দ্রুত এই বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ করা উচিত। অস্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি বন্ধ এবং ফুটপাত দখলমুক্ত করার জন্য তারা জোর দাবি জানিয়েছেন।