চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় সৌদি আরবে কাজের ভিসার নামে প্রতারণা ও চেক ডিজঅনারের অভিযোগে আদম ব্যাপারী খলিলুর রহমান পারভেজকে আটক করেছে চুনারুঘাট থানা পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ২০ লাখ ৯৬ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
আটক খলিলুর রহমান পারভেজ চুনারুঘাট পৌর এলাকার গোগাউড়া গ্রামের বাসিন্দা। সে দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে ট্রাভেলস ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে বিদেশে লোক পাঠানোর দালালি করে আসছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, পারভেজের বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি চেক প্রতারণা মামলা বর্তমানে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (কগ-২) আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। মামলার বাদী মোঃ আমীন আলী (পিতা—মোঃ মশ্বর আলী মীর), সাং—চামলতলী (মীরের বাড়ি), মিরাশী ইউনিয়ন, চুনারুঘাট।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে খলিলুর রহমান পারভেজ সৌদি আরবে দুই বছরের কাজের ভিসা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মোঃ আমীন আলীসহ মোট ৬ জনের কাছ থেকে নগদে ১৯ লাখ ২৬ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। প্রতি জনের জন্য নির্ধারিত ছিল ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যার মধ্যে ভিসা দেওয়ার আগেই ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়।
পরবর্তীতে আসামী ভিসা এসেছে বলে আরো ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা নেয়। পরবর্তীতে কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায়, সেগুলো ছিল মাত্র ৩ মাসের ভিজিট ভিসা। এতে প্রতারিতরা বিদেশ যাওয়া বাতিল করে টাকা ফেরত চাইলে আসামী নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন।
ঘটনার পর চুনারুঘাটের বাল্লা রোড এলাকায় একটি শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আসামী ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করে টাকা ফেরতের নিশ্চয়তা দেন এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, চুনারুঘাট শাখার একটি চেক (চেক নং: MCP 3930471) প্রদান করেন।
তবে ২৫ মে ২০২৫ তারিখে চেকটি ব্যাংকে উপস্থাপন করলে “Insufficient Fund” দেখিয়ে তা ডিজঅনার হয়। এরপর বাদীপক্ষ আইনজীবীর মাধ্যমে ৪ জুন ২০২৫ তারিখে লিগ্যাল নোটিশ পাঠালেও আসামী নোটিশ গ্রহণ না করায় তা ফেরত আসে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করায় বাদী Negotiable Instruments Act, 1881-এর ১৩৮ ধারায় আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ব্যাংক ব্যবস্থাপকসহ মোট ৭ জন সাক্ষীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার বাদী মোঃ আমীন আলী বলেন,
“আমি একজন সাধারণ মানুষ। কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়েছি। আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই।”
এদিকে আরেক ভুক্তভোগী জাকির হোসেনের মা রাজিয়া খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,
“আমার ছেলের মাধ্যমে বিদেশে একাধিক লোক পাঠানোর কথা বলে এই প্রতারক বিভিন্ন সময় আমার কাছ থেকে মোট ২০ লাখ ৯৬ হাজার টাকা নিয়েছে। টাকা ফেরত চাইলে আমার পরিবারের ওপর নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমি এই প্রতারকের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,আটককৃত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল আগামীকাল তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।