চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট–মাধবপুর) আসনে শেষ মুহূর্তে এসে আবারও প্রার্থী পরিবর্তন করেছে জামায়াতে ইসলামী। দলের প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমানের পরিবর্তে সোমবার (আজ) নতুন করে ৮ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব অধ্যাপক আহমদ আবদুল কাদেরকে। তিনি আজই এ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এর আগে এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রথম মনোনয়ন পান দলের হবিগঞ্জ জেলা আমির মুখলিছুর রহমান। তবে দলীয় সিদ্ধান্তে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। পরে গত ১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমানকে সমর্থন দেন। এরপর অলিউল্লাহ নোমান জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে বেশ কিছুদিন ধরে চুনারুঘাট ও মাধবপুর এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে আসছিলেন।
হঠাৎ করে প্রার্থী পরিবর্তনের ঘটনায় জামায়াতের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
জামায়াতকর্মী ওবায়দুল্লাহ তাঁর ফেসবুক পোস্টে অলিউল্লাহ নোমানের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে লেখেন, “একটা জৌলুশময় ও নিরাপদ জীবনের হাতছানিকে পেছনে ফেলে দেশমাতৃকার সেবার ইচ্ছাকে সামনে এনেছিলেন। ধৈর্যই মহত্ত্ব, ধৈর্যই শক্তি।”
একই পোস্টে নতুন প্রার্থীকে ইঙ্গিত করে তিনি কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেন।
এদিকে হবিগঞ্জ জেলা জামায়াতের যুগ্ম সেক্রেটারি ও শানখলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “মজলুম সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান ভাই অল্প সময়েই মানুষের মন জয় করেছিলেন। সংগঠন ও জোটের স্বার্থে আজ তার এই যাত্রা এখানেই থামছে।”
সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান গণমাধ্যমকে জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি দাড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থীতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। নির্বাচন না করলেও অন্য প্ল্যাটফর্মে চুনারুঘাট ও মাধবপুরের মানুষের জন্য কাজ চালিয়ে যাবেন বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য, অলিউল্লাহ নোমান দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সাংবাদিক। তিনি দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্যে বসবাসের পর গত বছর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে দেশে ফেরেন।
অন্যদিকে, নতুন মনোনয়ন পাওয়া খেলাফত মজলিসের মহাসচিব অধ্যাপক আহমদ আবদুল কাদের বলেন, তিনি ৮ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন এবং আশাবাদী যে জোটের শরিক দলগুলো তাঁর পক্ষে মাঠে কাজ করবে।
হবিগঞ্জ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি কাজী মহসিন আহমদ বলেন, “সংগঠনের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৮ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে অধ্যাপক আবদুল কাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।”
উল্লেখ্য, অধ্যাপক আহমদ আবদুল কাদের এর আগেও এই হবিগঞ্জ-৪ আসনে দু’বার বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন।