মাধবপুর প্রতিনিধি:হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া এলাকায় অবস্থিত নিশান সোসাইটির গ্রাহকরা বকেয়া টাকা ফেরতের দাবিতে মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে কয়েকশত গ্রাহক অংশ নেন।
সকাল ১০টার দিকে তেলিয়াপাড়া নিশান সোসাইটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন শুরু হয়। পরে দুপুর ১টার দিকে তারা জগদীশপুর তেমুনিয়া মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে অবস্থান নিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন। প্রায় এক ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ থাকায় শত শত যানবাহন আটকা পড়ে এবং ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। খবর পেয়ে মাধবপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
গ্রাহকরা অভিযোগ করেন, শুরুতে প্রতি লাখ টাকায় মাসে ২-৩ হাজার টাকা লাভের প্রলোভন দেখিয়ে নিশান সোসাইটি হবিগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলায় কার্যক্রম চালু করে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। কিন্তু এক বছর আগে গ্রাহকরা টাকা ফেরত চাইতে শুরু করলে কর্তৃপক্ষ টালবাহানা শুরু করে। পরে গ্রাহকদের চাপের মুখে পরিচালক সায়েম ও সালমান আত্মগোপনে চলে যান। এরপর চেয়ারম্যান বেলাল ও তার স্ত্রী আমেনা গা-ঢাকা দেন। সর্বশেষ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জালাল উদ্দিনও গ্রাহকদের আশ্বাস দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান।
গোয়াছনগর গ্রামের গ্রাহক নুরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “জমি বিক্রির টাকা সোসাইটিতে জমা করেছিলাম লাভের আশায়, কিন্তু এখন সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি।” সুরমা গ্রামের মানিক মিয়া জানান, টাকা ফেরত না পাওয়ার কষ্টে তার পিতা আরজু মিয়া মারা গেছেন। অন্যদিকে সুরমা চা-বাগানের শ্রমিক রোমানা বেগম বলেন, “কষ্টার্জিত অর্থ সোসাইটিতে জমা রেখেছিলাম, কিন্তু এখন সব অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছি।”
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, সোসাইটির কর্ণধাররা গা-ঢাকা দেওয়ার পর তাদের সম্পদও গোপনে দখল হয়ে যাচ্ছে। তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন নিশান সোসাইটির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়।
মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে গ্রাহকদের উচিত আইনি প্রক্রিয়ায় এগোনো। মহাসড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে সমস্যার সমাধান আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।”