
চুনারুঘাট প্রতিনিধি:পৈত্রিক জমি দখল ও হত্যার হুমকির অভিযোগ তুলে চুনারুঘাট উপজেলার ১নং গাজীপুর ইউনিয়নের বিলপাড় গ্রামের মোঃ আব্দুর রউফ (৫৫) প্রশাসন ও সাংবাদিকদের কাছে আকুতি জানিয়েছেন। রবিবার দুপুরে এক লিখিত অভিযোগ নিয়ে তিনি স্থানীয় প্রেসক্লাবে উপস্থিত হন।
লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, তাঁর পিতা মৃত আব্দুল গফফারের মৃত্যুর পর তিনি, তাঁর বড় ভাই এবং ছয় বোন বৈধভাবে পৈত্রিক সম্পত্তির মালিক ও দখলদার হিসেবে মাঠ জরিপে নামজারি পান। বিভিন্ন দাগে মোট ১০ একর ৫৭ শতক জমির ওপর তাদের দখল ও মালিকানা নিশ্চিত হয়। ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালেও মামলা খারিজ হয়ে তাদের পক্ষে রায় আসে।
‘প্রভাবশালী মহলের নির্যাতনে পৈত্রিক ভিটাতেও যেতে পারি না’
অভিযোগে বলা হয়, স্থানীয় হেলাল মিয়া, দুলাল মিয়া, এনাম মিয়া, এমরান মিয়া, ইমন মিয়া, সুমন মিয়াসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জন দীর্ঘদিন ধরে তাদের সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা করছে। আদালত ও প্রশাসনের একাধিক আদেশ তাদের অনুকূলে থাকলেও বিবাদীরা প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকায় কেউ সাক্ষ্য দিতে বা মুখ খুলতে সাহস পান না।
আব্দুর রউফ জানান, ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি চুনারুঘাট থানায় দায়ের করা মামলায় তিনজন আসামি গ্রেপ্তার হলেও জামিনে বের হয়ে আসে। তারপর ২০২২ সালের ২৯ জানুয়ারি তাদের দখলীয় জমিতে ফলানো গাছ কেটে নেয়া হয় এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।
নিজ পিতাকে হত্যার অভিযোগও উত্থাপন
আবেদনপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, আসামি এমরান মিয়া ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর জমি নিয়ে বিরোধের জেরে নিজের পিতা ফিরুজ মিয়াকেও হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত। এছাড়া ২০২০ সালের ৭ মার্চ তাঁর সহোদর মোঃ আব্দুর রহমানকে প্রকাশ্যে মারধর করে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। ওই ঘটনায় আদালত দুই আসামিকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা প্রদান করেন।
‘আমরা নিরীহ মানুষ—জীবন বাঁচাতে চাই’
জীবন নিয়ে চরম শঙ্কা প্রকাশ করে আব্দুর রউফ বলেন—
“যারা নিজের পিতাকেও হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করে না, তাদের কাছে আমরা কিভাবে নিরাপদ? আমরা পৈত্রিক ভিটায় ফিরতে চাই। সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ—আমাদের নিরাপত্তা ও জমি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।”
তফসিল বর্ণিত মোট জমি
প্রথম তফসিল: মৌজা দুধপাতিল—৫ একর ৭৩ শতক
দ্বিতীয় তফসিল: মৌজা গাজীপুর—৪ একর ৮৪ শতক
মোট জমি: ১০ একর ৫৭ শতক
তিনি আশা প্রকাশ করেন, গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ পেলে প্রশাসন দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে তাদের পরিবারকে স্বস্তি দেবে।