চুনারুঘাট প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার এক ব্যবসায়ীর পুরাতন মোটরসাইকেল নিয়ে চাঞ্চল্যকর চাঁদাবাজি ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জামাই পরিচয়ের এক প্রতারকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী মোঃ রোমান আহমদ (৩৮), পিতা- মোঃ আব্দুল মতিন, গ্রাম- দেউন্দি বস্তি, ৫নং শানখলা ইউনিয়ন, চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রোমান আহমদের নিজের নামে কেনা লাল-কালো রঙের একটি পুরাতন Bajaj Pulsar 150cc মোটরসাইকেল (রেজিঃ হবিগঞ্জ-ল-১১-১৪০৩), যার মূল্য প্রায় ১,১০,০০০/- টাকা। গত ২২ জুলাই ২০২৫ ইং, বিকাল আনুমানিক ৩টা নাগাদ রোমানের ছোট ভাই মোঃ রাসেল আহমদ ওই মোটরসাইকেলটি নিয়ে যান লস্করপুর চা-বাগানে। সেখানে থাকা অবস্থায় অভিযুক্ত মোঃ সাদ্দাম মিয়া (৩৪), পিতা- মৃত আব্দুল আলী, সাং- চান্দপুর বস্তি, ৩নং দেওরগাছ ইউনিয়ন, চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ—রাসেল আহমদের মোবাইল নম্বরে ফোন করে জানায়, সে চান্দপুর বাগানে অবস্থান করছে এবং বদরগাজী যেতে চায়, কিন্তু গাড়ি পাচ্ছে না। এজন্য সে রাসেলকে অনুরোধ করে তাকে পৌঁছে দিতে।
সাদ্দাম মিয়া, যিনি তাদের গ্রামের জামাই, হওয়ায় রাসেল কোনো সন্দেহ না করে তাকে মোটরসাইকেলে তুলেন এবং রওনা হন বদরগাজীর উদ্দেশ্যে। বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে বেগমখান চা-বাগানে পৌঁছালে সাদ্দাম রাসেলকে গাড়ি থামাতে বলেন এবং জানান, তার এক বন্ধুর কাছে কিছু টাকা পাওয়া আছে, যা আনতে তিনি ৫ মিনিটেই ফিরে আসবেন। কিন্তু এরপর তিনি আর ফেরেননি। রাসেল রাত ১১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করেও সাদ্দামের খোঁজ না পেয়ে বিষয়টি তার বড় ভাই রোমানকে জানান।
পরদিন রোমান আহমদ এলাকার লোকজন ও দুইজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী—মোঃ আজিজুর রহমান জসিম (৩২) ও মোঃ সুজন মিয়া (২৭), উভয়ই কাঠালবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা—কে সঙ্গে নিয়ে সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। অবশেষে ২৩ জুলাই রাত ৯টার দিকে স্থানীয় দেওরগাছগামী রাস্তার পূর্ব পাশের একটি ধানক্ষেতের পাশ থেকে মোটরসাইকেলটির বিভিন্ন কাটা-ছেঁড়া যন্ত্রাংশ ও ক্যাবল উদ্ধার করা হয়। তবে গাড়ির গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র গায়েব ছিল।
এরপর অভিযুক্ত সাদ্দাম মিয়া মোবাইল ফোনে রোমানকে জানায়, গাড়ির কাগজপত্র তার ঘা কাছেই আছে এবং তা ফেরত পেতে হলে তাকে ১০,০০০/- টাকা দিতে হবে। এছাড়াও সাদ্দাম হুমকি দেন, যদি তার শর্ত না মানা হয় বা উদ্ধার কাজে সহযোগিতাকারী আজিজুর ও সুজনকে যে কোন সময় রাস্তাঘাটে একা ফেলে তিনি তাদের হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবেন।
রোমান আহমদ বলেন, “ঘটনার পর থেকেই আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যরা ভয়ে আছি। বিষয়টি এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে আলোচনা করে অবশেষে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।”
স্থানীয়দের মতে, অভিযুক্ত সাদ্দাম মিয়ার বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগটি এখন চুনারুঘাট থানায় প্রক্রিয়াধীন।
এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে প্রত্যাশা ভুক্তভোগী পরিবারসহ এলাকাবাসীর।